সকালের নাস্তায় ডিম, অনেকের কাছেই একটি পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু এই ছোট্ট খাবারটিতে আছে অগণিত পুষ্টিগুণ। ডিম আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী, আবার কখন এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে, এই বিষয়টি নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা ডিমের পুষ্টিগুণ, এর বিভিন্ন উপকারিতা এবং ক্ষতির কারণগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আমরা জানব, কী কারণে ডিমকে একটি সম্পূর্ণ খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং কারা সবসময় ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এছাড়াও, আমরা জানবো ডিম খেলে কি পুরুষদের সেক্স বৃদ্ধি করে? চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
ডিমের উপকারিতা
ডিমের উপকারিতা কি? চলুন জেনে, নিই প্রতিদিন ডিম খেলে আমাদের শরীরে কী কী ঘটে –
- মন শান্ত করে: ডিমে প্রচুর ট্রিপটোফেন থাকে, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
- ভালো ঘুমের জন্য: ডিম মেলাটোনিনের বড় উৎস, যা আমাদের ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এবং গভীর ও শান্ত ঘুমে সহায়তা করে।
- শরীরে ভালো কোলেস্টেরল জমা হয়: ডিম হাড় এবং মস্তিষ্কের কোষগুলোর কার্যকারিতা উন্নত করে, এছাড়া এটি ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়িয়ে দেয়।
- পাকস্থলীর গতি বাড়ায়: রাতে ডিম খাওয়া ওজন কমাতে দুভাবে কাজ করে। এটি পাকস্থলীর গতি বাড়িয়ে দেয় এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে।
- পেশী গঠনে সহায়ক: ডিম উচ্চমাত্রার প্রোটিন সরবরাহ করে, যা পেশী গঠনে এবং মেরামতে অত্যন্ত কার্যকর।
- দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে: ডিমে লুটেইন এবং জ্যাক্সান্থিন থাকে, যা চোখের মঙ্গল রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে: ডিমে থাকা সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে: ডিমে থাকা ভিটামিন ই এবং বায়োটিন ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
- ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যা দূর করে: পুরুষদের ইরেকটাইল ডিসফাংশনের (Erectile Dysfunction) মতো আরও বিভিন্ন সমস্যায় সাহায্য করে।
ডিমের কুসুমের উপকারিতা
ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। এই সমস্ত পুষ্টি উপাদান শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কার্যক্রমে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য, ভিটামিন এ চোখের জন্য ভালো, এবং ভিটামিন ই ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। সেলেনিয়াম একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে।
ডিমের কুসুমে কোলিন থাকে, যা মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া, লুটেইন এবং জেক্সানথিন নামক দুটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিমের কুসুমে পাওয়া যায়, যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে। লুটেইন এবং জেক্সানথিন বয়সজনিত চোখের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে। ডিমের কুসুমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ডিমের খোসার উপকারিতা
ডিম খাওয়ার পর আমরা সাধারণত ডিমের খোসা ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কি, এই খোসা আপনার দৈনন্দিন জীবনে কত কাজে লাগতে পারে? চলুন জেনে নিই ডিমের খোসার কিছু অসাধারণ ব্যবহার।
সার হিসেবে
ডিমের খোসা ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস হিসেবে পরিচিত। গাছের সার হিসেবে ডিমের খোসার ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী। খোসার ক্যালসিয়াম গাছের শেকড়কে মজবুত করে তোলে এবং মাটির পিএইচ স্তরও সমন্বয় করতে সাহায্য করে। তাই ডিমের খোসাগুলো ফেলে না দিয়ে শুকিয়ে পিষে গাছের গোড়ায় ছড়িয়ে দিতে পারেন, এতে গাছ ভালোভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং মাটির পুষ্টি বৃদ্ধি পাবে। প্রয়োজনে, অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান যেমন কম্পোস্ট বা গোবর সারেও মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ফাস্ট এইড হিসেবে
ডিমের খোসা ফাস্ট এইড হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। সেদ্ধ ডিমের খোসা এবং এগ হোয়াইটের মধ্যে থাকা পাতলা সাদা আবরণটি সাধারণ কাটা-ছেঁড়া সারাতে দারুণ উপকারী হতে পারে। এটি ব্যান্ডেজের মতো কাটা জায়গায় লাগিয়ে রাখলে খুব দ্রুত রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
রুপার বাসন পরিষ্কার করতে
রুপার বাসন পরিষ্কার করতেও ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। সেদ্ধ ডিমের খোসা গুঁড়ো করে তা দিয়ে রুপার বাসন ও গয়না পরিষ্কার করলে ঝকঝকে হয়ে যাবে।
সিংক পরিষ্কার করতে
রান্নাঘরের সিংক পরিষ্কার করতেও ডিমের খোসা দারুণ কাজে লাগতে পারে। সিংকের নলে খাবারের টুকরো আটকে গেলে ডিমের খোসা রেখে দিলে খাবারের টুকরো তার মধ্যে থেকে যাবে এবং মুখ বন্ধ হবে না।
ফ্লাস্ক পরিষ্কার করতে
ফ্লাস্ক পরিষ্কার করতেও ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। খোসা টুকরো করে ফ্লাস্কের মধ্যে ফেলে গরম পানি ঢালুন এবং মুখ বন্ধ করে ঝাঁকিয়ে নিন, এতে ফ্লাস্ক একদম নতুনের মতো হয়ে যাবে।
পোড়া দাগ তুলতে
রান্না করতে গিয়ে পুড়ে যাওয়া কড়াই ঝকঝকে করতে ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। খোসা গুঁড়ো করে পোড়া পাত্রের মধ্যে লবণ এবং পানি দিয়ে ফুটিয়ে নিন, ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, দেখবেন পোড়া দাগ সহজেই উঠে যাবে।
স্ক্রাব হিসেবে
ডিমের খোসা দিয়ে ত্বকের পরিচর্যার জন্য স্ক্রাব তৈরি করতে পারেন। খোসা গুঁড়ো করে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে মুখে লাগান, শুকিয়ে গেলে গরম পানি দিয়ে হালকা হাতে ঘষে তুলে নিন, এতে ত্বক কোমল হবে।
পাখিদের খাবার হিসেবে
পাখিদের খাবার হিসেবে ডিমের খোসা ব্যবহার করতে পারেন। খোসা গুঁড়ো করে বারান্দায় বা ছাদে রেখে দিন, পাখিরা সেটি খাবে।
মোমদানি তৈরি করতে
ডিমের খোসা দিয়ে মোমদানি বানাতে পারেন। সাদা খোসায় স্প্রে রং ব্যবহার করে ঘর সাজানোর নানা সামগ্রী তৈরি করতে পারেন।
টিকটিকির উপদ্রব কমাতে
টিকটিকির উপদ্রব কমাতে ডিমের খোসা ঘরের এক কোণে রেখে দিন, এতে টিকটিকির উপদ্রব কমবে।
অন্যান্য ব্যবহারের ক্ষেত্র
ডিমের খোসার আরও কিছু ব্যবহার রয়েছে। ডিমের খোসা ব্যবহার করে ছোটো পাত্র তৈরি করতে পারেন যেখানে ছোট গাছ লাগানো যায়। এছাড়াও, ডিমের খোসা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে মাটির পুষ্টি বাড়ানো যায়। এমনকি, ঘরের ভিতরে থাকা ছোট পোকামাকড় তাড়ানোর জন্যও ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডিমের অপকারিতা
অতিরিক্ত ডিম খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে –
- রক্তের কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া: বিশেষ করে ডিমের কুসুম খেলে এই সমস্যা বেশি হয়, যা হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ডিমে কিছু ভালো ফ্যাট থাকলেও, স্যাচুরেটেড ফ্যাটও থাকে যা শরীরের জন্য ভালো নয়।
- হার্টের রোগীদের সতর্কতা: হার্টের রোগী বা উচ্চ কোলেস্টেরল আছে এমন ব্যক্তিদের ডিমের কুসুম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। একই সতর্কতা ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
- অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ: অনেকেই মনে করেন ডিমের সাদা অংশে ভালো প্রোটিন অ্যালবুমিন থাকায় বেশি করে খাওয়া যাবে। মাংসপেশি বাড়ানোর জন্য অনেকে এক দিনে বেশ কয়েকটি ডিম খান। যদিও দৈনন্দিন ডিমের সাদা অংশ খাওয়া ভালো, অতিরিক্ত অ্যালবুমিন গ্রহণে শরীরে বায়োটিন নামক এক ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়।
- অ্যালার্জিজনিত সমস্যা: ডিমের অ্যালার্জি যাদের আছে, তাদের বেশি ডিম খেলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে।
- গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।
পুরুষের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ইয়েস মেন
ইয়েস মেনে পুরুষদের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ইউরোপ থেকে আমদানিকৃত উন্নত মানের পেলভিক স্টিমুলেশন, শক ওয়েভ থেরাপি, আকুপাংচার , আরটিএমএস (rTMS) ও পি ই এম এফ (PEMF) দিয়ে দ্রুত বীর্যপাত, যৌন আকাঙ্ক্ষা, ইরেকটাইল ডিসফাংশন, পেরোনিস ডিজিজ, প্রস্টেটাইটিস, প্রোস্টেট ক্যান্সার, প্রোস্টেট এনলার্জমেন্ট, প্রস্রাব সম্পূর্ণ না হওয়া, মল ধরে রাখতে না পারা, কোষ্ঠকাঠিন্য , ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এবং ঘন ঘন প্রস্রাবের চিকিৎসা করানো হয়ে থাকে। তাই আর দেরি না করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট “ইয়েস মেনে”। উত্তরা শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে কল করুন- +8801305301247. এবং বনানী শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে কল করুন- +8801753631846.
আরও জানুন: ছেলেরা বিয়ে করে কিসের জন্য | তাড়াতাড়ি বিয়ে করার উপকারিতা
আরও জানুন: অলিভ অয়েল তেল ব্যবহারের নিয়ম এবং এই তেলের উপকারিতা কি?
তথ্য সূত্র
Healthline – 9 Health Benefits of Eating Eggs
Good Food – Top 10 health benefits of eggs
Australian Eggs – The Health Benefits of Eggs
WebMD – Health Benefits of Eggs
Keck Medicine – 9 Health Benefits of Eating Eggs for Breakfast
Pharm Easy – The Ultimate Health Benefits Of Eggs
সাধারণ জিজ্ঞাসা
প্রতিদিন একটি করে হাঁসের ডিম খেলে কি হয়?
প্রতিদিন একটি করে হাঁসের ডিম খেলে শরীরে উচ্চমানের পুষ্টি পাওয়া যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
হাঁসের ডিমের উপকারিতা
হাঁসের ডিমে থাকা উচ্চ পুষ্টিগুণ শরীরকে শক্তি দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মুরগির ডিমের উপকারিতা
মুরগির ডিম শুধুই নাশতা নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণে ভরপুর খাবার। ছোট্ট এই খাবারটিতে প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানই পাওয়া যায়।
কোয়েলের ডিমের উপকারিতা
কোয়েলের ডিম, আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি মুরগির ডিমের চেয়ে অনেক হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য।