Yes Men

অন্ডকোষে পানি জমার কারণ | ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায়

অন্ডকোষে পানি জমার কারণ | ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায়

আপনার অন্ডকোষে পানি জমেছে বা ঝুলে যাচ্ছে? এই সমস্যাটি অনেক পুরুষকেই বিভিন্ন সময় বিরক্ত করে। কিন্তু চিন্তা করার কিছু নেই, এই সমস্যার সঠিক কারণ এবং সমাধান সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।

আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা অন্ডকোষে পানি জমার কারণ, ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায় এবং এর সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

অন্ডকোষ ঝুলে থাকার কারণ কি?

অন্ডকোষ ঝুলে থাকার কারণ কি?

অন্ডকোষ দেহের বাইরে ঝুলে থাকার প্রধান কারণ হলো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, যা ভালো মানের শুক্রাণু তৈরিতে সহায়ক। শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বেশি হলে অন্ডকোষ নিচের দিকে ঝুলে যায়, যাতে তা শরীর থেকে দূরে থেকে একটু ঠান্ডা থাকতে পারে। আবার, যখন ঠান্ডা পরিবেশ থাকে, তখন অন্ডকোষ শরীরের কাছাকাছি চলে আসে উষ্ণ থাকার জন্য। কিছু সমস্যার মধ্যে হাইড্রোসিল ও হার্নিয়া উল্লেখযোগ্য। হাইড্রোসিলে অন্ডকোষের চারপাশে তরল জমে যায়, যা প্রদাহ বা আঘাতের কারণে হতে পারে। আর হার্নিয়ায় পেটের ভেতরের কোনো অংশ অন্ডকোষের দিকে ধাক্কা দেয়, যা সাধারণত বেশি চাপ পড়লে বা কাশি, হাঁচির সময় অনুভূত হয়।

ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায়

ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায়

অণ্ডকোষ ঝুলে যাওয়া পুরুষদের জন্য একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, যা শরীরের তাপমাত্রার সাথে পরিবর্তিত হয়। গরম আবহাওয়া বা শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে অণ্ডকোষ নিচের দিকে ঝুলে পড়ে, কারণ এভাবে শরীর শুক্রাণুকে সঠিক তাপমাত্রায় রাখতে সক্ষম হয়। আবার, ঠান্ডা আবহাওয়ায় বা ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে এলে অণ্ডকোষ শরীরের কাছাকাছি উঠে আসে, যেন শুক্রাণুর জন্য সঠিক তাপমাত্রা বজায় থাকে। এই প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক এবং এর ফলে কোনো সমস্যা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি সাধারণত দেখা যায় না। এটি শরীরের প্রাকৃতিক পদ্ধতি, যা পুরুষদের প্রজননক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

অনেক পুরুষই অণ্ডকোষ ঝুলে যাওয়ার কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েন, তবে এটি স্বাভাবিক, কারণ এটি কোনো রোগ নয়। এটি মূলত তাপমাত্রার ওপর নির্ভরশীল, এবং এতে শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় থাকে। গরমকালে যখন শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তখন অণ্ডকোষ নিচে ঝুলে শরীর থেকে একটু দূরে চলে যায়। এর ফলে শুক্রাণুর তাপমাত্রা ঠিক থাকে এবং তারা সঠিকভাবে বৃদ্ধি পায়। শীতকালে বা ঠান্ডা পরিবেশে আবার অণ্ডকোষ শরীরের কাছাকাছি চলে আসে, যাতে শরীরের তাপমাত্রায় শুক্রাণু গরম থাকে এবং ক্ষতি না হয়।

যদিও অণ্ডকোষ ঝুলে যাওয়া কোনো সমস্যা নয়, কিছু পুরুষ এই কারণে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। যদি এমনটা ঘটে, তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এই ধরনের অবস্থার মোকাবিলা করা সম্ভব হয়, তবে অতিরিক্ত অস্বস্তি বা যন্ত্রণার জন্য ডাক্তার ছোট অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অণ্ডকোষকে স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে পারেন। এই ধরনের অস্ত্রোপচার সাধারণত নিরাপদ এবং দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ ঝুলে থাকলে তা টেপ বা অন্য কোনো যন্ত্র দিয়ে সাময়িকভাবে সঠিক অবস্থানে রাখা যায়, তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়।

ঝুলে যাওয়া অণ্ডকোষের লক্ষণগুলির মধ্যে ব্যথা বা অস্বস্তি, অণ্ডকোষের আকার পরিবর্তন, ত্বকে লালভাব বা ফোলাভাব এবং ত্বকে অতিরিক্ত গরম অনুভূতি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই লক্ষণগুলো মারাত্মক নয়, কিছু ক্ষেত্রে এটি সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন, অণ্ডকোষের ক্ষতি, শুক্রাণু উৎপাদনে বিঘ্ন বা বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাব, এবং পারিবারিক ইতিহাসও ঝুলে যাওয়া অণ্ডকোষের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অণ্ডকোষের ঝুলে যাওয়ার জন্য তেমন বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না, তবে যদি এই কারণে কোনো সমস্যা অনুভূত হয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথা বা ফোলাভাব থাকলে ডাক্তার পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারেন। এছাড়া, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে অণ্ডকোষের ঝুলে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

অন্ডকোষে পানি জমার কারণ

অন্ডকোষে পানি জমার কারণ

অন্ডকোষে পানি জমা, যা হাইড্রোসিল নামে পরিচিত, একটি সাধারণ শারীরিক অবস্থা। এটি ঘটে যখন অন্ডকোষের চারপাশে থাকা টিস্যুর স্তরের মধ্যে অতিরিক্ত পানি বা তরল জমা হয়। হাইড্রোসিল সাধারণত ব্যথাহীন হয় এবং ফোলা দিয়ে প্রকাশিত হয়। এটি নবজাতক শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তবে বয়স্ক পুরুষদেরও এটি হতে পারে। অনেক সময়, এটি নিজের থেকেই সেরে যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

নবজাতক শিশুদের মধ্যে হাইড্রোসিলের কারণ

নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে, হাইড্রোসিল সাধারণত জন্মের সময় উপস্থিত থাকে। যখন শিশুর অন্ডকোষ গর্ভাবস্থায় পেট থেকে নিচে নামে, তখন এটি একটি থলির মতো স্তরে আবৃত থাকে, যা অন্ডকোষকে সুরক্ষা দেয়। এই থলির ভেতরে তরল থাকার জন্য স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, এই তরল শোষিত হয় না বা থলিটি পুরোপুরি বন্ধ হয় না, ফলে সেখানে তরল জমা হয় এবং হাইড্রোসিল তৈরি হয়। যেসব শিশু আগেভাগে জন্ম নেয়, তাদের হাইড্রোসিল হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে, কারণ তাদের অন্ডকোষ সম্পূর্ণভাবে বিকশিত না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে হাইড্রোসিলের কারণ

বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে হাইড্রোসিলের আরেকটি সাধারণ কারণ হলো অন্ডকোষে আঘাত বা প্রদাহ। আপনার অন্ডকোষে যদি কোনো আঘাত লাগে বা সেখানে কোনো প্রদাহ হয়, তবে অন্ডকোষের চারপাশে থাকা টিস্যুর স্তরের মধ্যে পানি জমতে পারে। সংক্রমণের কারণেও অন্ডকোষ বা তার পাশের ছোট, কুণ্ডলীকৃত টিউবগুলোতে প্রদাহ হতে পারে, যা হাইড্রোসিলের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, কিডনি বা হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে তরল জমতে পারে, এবং এর প্রভাব হিসেবে অন্ডকোষেও পানি জমতে পারে। যারা অতীতে অন্ডকোষের আঘাত, সংক্রমণ বা প্রদাহে ভুগেছেন, তাদের মধ্যে হাইড্রোসিল হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

হাইড্রোসিলের লক্ষণ

হাইড্রোসিলের প্রধান লক্ষণ হলো অন্ডকোষের ফোলা, যা সাধারণত ব্যথাহীন। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি ব্যথাহীন ফোলার মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যা বাবা-মা লক্ষ্য করতে পারেন। ফোলা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে, তবে এতে তেমন ব্যথা থাকে না। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে, অন্ডকোষ ভারী বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে, বিশেষ করে যদি ফোলার আকার বড় হয়। যাইহোক, ফোলা অন্ডকোষের ফলে সাধারণত ব্যথা হয় না, তবে যদি সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকে, তখন ব্যথা হতে পারে।

হাইড্রোসিলের চিকিৎসা

নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে হাইড্রোসিল সাধারণত কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সেরে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এক বছরের মধ্যেই হাইড্রোসিল স্বাভাবিকভাবে চলে যায়। এই সময়ের মধ্যে শিশুর দেহ নিজে থেকেই অন্ডকোষের চারপাশের জমে থাকা পানি শোষণ করে নেয়। তবে, যদি এক বছরের পরেও হাইড্রোসিল থেকে যায় বা বড় হয়ে যায়, তখন ডাক্তারকে দেখানো উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজন বুঝে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিতে পারেন।

বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে, যদি হাইড্রোসিলের আকার বড় হয় বা এতে অস্বস্তি হয়, তখন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। ইউরোলজিস্ট নামক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাইড্রোসিলের চিকিৎসা করেন। বড়দের মধ্যে হাইড্রোসিল খুব কমই নিজে থেকে সারে, তাই অনেক সময় অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অন্ডকোষের চারপাশ থেকে পানি বের করে দেয়া হয় এবং টিস্যুগুলোকে সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়, যাতে পুনরায় পানি জমার সম্ভাবনা না থাকে।

হাইড্রোসিলের অস্ত্রোপচার বেশিরভাগ সময়ই নিরাপদ এবং এটি সম্পূর্ণ সুস্থতার দিকে নিয়ে যায়। যাইহোক, অপারেশনের পর কিছুদিন বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন, এবং সেই সময় অন্ডকোষের দিকে বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত। দীর্ঘমেয়াদি কোনো জটিলতা সাধারণত দেখা যায় না, তবে পুনরায় হাইড্রোসিল হওয়ার ঝুঁকি খুব কম।

বিস্তারিত জানুন: রসুনের তেল বানানোর নিয়ম এবং লিঙ্গে রসুন তেলের উপকারিতা কি?

বিস্তারিত জানুন: ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

বিস্তারিত জানুন: সহবাসের আগে লবঙ্গ খেলে কি হয়?, উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম কি?

 

তথ্য সূত্র

WebMD — Testicles FAQ 

Health — What To Know About Testicles

Cleveland Clinic — Retractile Testicle 

সাধারণ জিজ্ঞাসা

অর্কাইটিস হল অণ্ডকোষের প্রদাহ বা সংক্রমণ, যা সাধারণত ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অন্ডকোষে ব্যথা, ফোলাভাব, অথবা ভারী অনুভূতি। মাম্পস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কিংবা যক্ষ্মায় আক্রান্ত পুরুষদের অর্কাইটিসের ঝুঁকি থাকতে পারে। এছাড়াও, যৌনবাহিত সংক্রমণ থেকেও অর্কাইটিস হতে পারে।

মাম্পসের কারণে হওয়া ফোলা সাধারণত কোমল বা নরম হয়, বিশেষ করে কানের কাছে অবস্থিত গ্রন্থিগুলোতে। ফোলার অংশ স্পর্শে সামান্য ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে, তবে এটি কঠিন বা শক্ত নয়।

মাম্পস হলে লবণ পানি খাওয়ার নির্দিষ্ট প্রয়োজন নেই, তবে এটি পান করা সাধারণত ক্ষতিকরও নয়। লবণ পানি গলা পরিষ্কার করতে সহায়ক হতে পারে, তবে মাম্পসের চিকিৎসার জন্য বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখে না। মাম্পসের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল গ্রহণ, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অণ্ডকোষ নষ্ট হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে শুক্রাণু উৎপাদন কমে যেতে পারে বা বন্ধ হতে পারে, যার ফলে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি থাকে। এছাড়াও, টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন কমে যেতে পারে, যা শারীরিক ও যৌন স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top