মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন হলো একটি স্বাভাবিক ও ব্যক্তিগত শারীরিক অভ্যাস, যা সাধারণত কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মধ্যেও দেখা যায়। এটি মানুষের শরীরের প্রাকৃতিক একটি চাহিদা পূরণের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে মাস্টারবেশন নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে আছে, যার ফলে অনেকেই অকারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বা অপরাধবোধে ভোগেন।
বিশেষ করে, মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয়? এই প্রশ্নটি অনেকের মনেই ঘোরাফেরা করে। অনেকেই মনে করেন যে, নিয়মিত হস্তমৈথুন করলে শরীরে মারাত্মক রোগ হতে পারে, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। অথচ বৈজ্ঞানিকভাবে এই দাবি সত্য নয়। এখন পর্যন্ত কোনও গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়নি যে মাস্টারবেশন করার কারণে ক্যান্সার হয়। বরং কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বীর্যপাত পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবুও এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে, তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে মাস্টারবেশন নিজে থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি করে না।
মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয়?
মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয় এই প্রশ্নটি নিয়ে অনেকের মনে বিভ্রান্তি আছে। যৌনসঙ্গমের ক্ষেত্রে কিছু শারীরিক লাভ আছে। হস্তমৈথুনের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণে লাভ না থাকলেও, ক্ষতিও নেই। তবে নতুন কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে পুরুষরা যদি হস্তমৈথুন করে, তাহলে তাদের প্রস্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে যায়। শুধু তাই নয়, নিয়মিত হস্তমৈথুনের কারণে প্রস্টেট নিয়ে অন্য সমস্যাও কম হতে দেখা যায়।
বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষা বলছে, মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয়? এর উত্তর হলো, হস্তমৈথুন ক্যান্সার বাড়ায় না, বরং কমাতে সাহায্য করে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ বছর ধরে চলা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ২১ বারের বেশি হস্তমৈথুন করেন, তাঁদের প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। প্রায় ৩২ হাজার পুরুষকে নিয়ে পরিচালিত এই গবেষণায়, ২০ বছর বয়স থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত তাদের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং দেখা যায়, যারা নিয়মিত হস্তমৈথুন করেন, তাদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সার অনেক কম দেখা যায়। গবেষকদের মতে, ঘন ঘন বীর্যপাত প্রস্টেট গ্রন্থিতে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
তবে, মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয় এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। বরং, মাস্টারবেশন করলে শরীরের ক্ষতি হয় না এবং এটি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমায়, বিশেষ করে প্রস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে। তবে শুধু মাস্টারবেশন করলেই হবে না, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি।
সুতরাং, মাস্টারবেশন করলে কি ক্যান্সার হয়? এর উত্তর হলো, না, মাস্টারবেশন করলে ক্যান্সার হয় না, বরং এটি প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই বিষয়ে ভুল ধারণা না রেখে, বৈজ্ঞানিক গবেষণার ওপর ভরসা রাখাই ভালো।
মাস্টারবেশন করলে কি ওজন কমে?
মাস্টারবেশন করলে কি ওজন কমে এই প্রশ্নটি অনেকের মনেই আসে, তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনও সরাসরি প্রমাণ নেই। “হস্তমৈথুনের ফলে কি ওজন কমে যায়? হস্তমৈথুনের সঙ্গে ওজন কমে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।” বেশিরভাগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা একমত যে, মাস্টারবেশন করলে ওজন কমে না। এটি শরীরের স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর একটি যৌন আচরণ, যার মানসিক চাপ কমানো, ঘুমের মান উন্নত করা, এবং কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকলেও ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এর কোনও ভূমিকা নেই।
অনেক অনলাইন ফোরাম ও প্রশ্নোত্তর সাইটে “মাস্টারবেশন করলে কি ওজন কমে?” নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য পাওয়া যায়। কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন, মাস্টারবেশন করলে শরীর থেকে ক্যালোরি নষ্ট হয় এবং দুর্বলতা আসে, তাই ওজন কমে যেতে পারে। তবে, আধুনিক চিকিৎসা গবেষণা অনুযায়ী, মাস্টারবেশন করলে যে পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হয় তা খুবই সামান্য, যা ওজন কমানোর জন্য যথেষ্ট নয়। বরং, অতিরিক্ত মাস্টারবেশন করলে সাময়িক ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে, কিন্তু এটি স্থায়ী ওজন হ্রাসের কারণ নয়।
কিছু মানুষ মনে করেন অতিরিক্ত মাস্টারবেশন শরীরের পুষ্টি ও শক্তি কমিয়ে দেয়, ফলে ওজন কমে যেতে পারে। বাস্তবে, নিয়মিত মাস্টারবেশন শরীরের স্বাভাবিক হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমায়, তবে ওজন কমানোর সঙ্গে এর কোনও বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক নেই। বরং, মানসিক চাপ কমলে অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যেতে পারে, যা পরোক্ষভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু এটি মাস্টারবেশনের সরাসরি প্রভাব নয়।
মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয়?
মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয় এই প্রশ্নটি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বহু বিতর্কিত। প্রথমেই উল্লেখযোগ্য, জাকির নায়েক বলেন, হস্তমৈথুন জিনার সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না, এবং তার নিজস্ব মতে স্বাভাবিক অবস্থায় হস্তমৈথুন হারাম নয় বরং মাকরুহ অথবা অপছন্দনীয়, তবে তা স্বাভাবিকের বারবার করা হলে অথবা পর্নোগ্রাফির সাথে করা হলে তা হারাম। এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয়? এর উত্তর সবসময় একরকম নয়, বরং পরিস্থিতি ও উদ্দেশ্যের ওপর নির্ভর করে।
বিভিন্ন ইসলামিক স্কলার ও মাজহাবের মধ্যে মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয় এই বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। অনেক আলেম কুরআনের সূরা মুমিনুন (৫-৭) ও অন্যান্য আয়াতের ভিত্তিতে বলেন, স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া অন্যভাবে যৌন চাহিদা পূরণ করা সীমালঙ্ঘন, তাই মাস্টারবেশন গুনাহ ও হারাম। আবার কিছু আলেম মনে করেন, যদি কেউ চরম যৌন উত্তেজনা বা ব্যভিচারে পড়ার আশঙ্কা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মাস্টারবেশন করে, তবে তা মাকরুহ বা অপছন্দনীয় হলেও কঠোরভাবে গুনাহ বলা যায় না। তবে অধিকাংশ আলেমের মতে, মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয়? এর উত্তর হলো, সাধারণ অবস্থায় এটি গুনাহ ও নিষিদ্ধ, তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুটা শিথিলতা থাকতে পারে।
অনেক ইসলামিক প্রশ্নোত্তর ও ব্লগে দেখা যায়, মাস্টারবেশন করলে কি গুনাহ হয় এ প্রশ্নের উত্তরে সুন্নাহ ও কুরআনের আলোকে বেশিরভাগই একে হারাম বা আত্মঘাতী পাপ হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে কিছু স্কলার বলেন, কুরআন ও হাদিসে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই একে মুবাহ বা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয় বলা যেতে পারে, বিশেষত যদি তা ব্যভিচার থেকে বাঁচার জন্য হয়।
পুরুষদের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য ইয়েস মেন
“ইয়েস মেন” ক্লিনিক পুরুষদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সেবার একটি বিশ্বস্ত ঠিকানা। এখানে ইউরোপ থেকে আনা উন্নতমানের চিকিৎসা যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা প্রদান করা হয়। আমাদের বিশেষ থেরাপিগুলোর মধ্যে রয়েছে পেলভিক স্টিমুলেশন থেরাপি, যা পেলভিক অঞ্চলের দুর্বল পেশি পুনরায় সক্রিয় করে তোলে। শক ওয়েভ থেরাপি রক্ত চলাচল বাড়িয়ে যৌন দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। আকুপাংচার থেরাপি শরীর ও মনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে মানসিক শান্তি এনে দেয়। rTMS থেরাপি (Repetitive Transcranial Magnetic Stimulation) মস্তিষ্কের স্নায়ুকে সক্রিয় করে, যা মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সহায়ক। অন্যদিকে, PEMF থেরাপি (Pulsed Electromagnetic Field Therapy) শরীরের কোষের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দ্রুত আরোগ্য লাভ ও ব্যথা উপশমে কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রতিটি চিকিৎসাই নিরাপদ, প্রমাণিত এবং পেশাদার বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়, যাতে রোগীরা সঠিক সমাধান ও মানসিক প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব। আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে কোনো শারীরিক বা যৌন সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং তার কার্যকর ও আধুনিক সমাধান খুঁজে থাকেন, তাহলে আর দেরি না করে আজই “ইয়েস মেন” ক্লিনিকে যোগাযোগ করুন। আমাদের বনানী শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে কল করুন: +8801753631846 এবং উত্তরা শাখায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে কল করুন: +8801305301247।
বিস্তারিত জানুন: মাস্টারবেশন করলে কি বাচ্চা হয় না?
বিস্তারিত জানুন: টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ভিটামিন
বিস্তারিত জানুন: বহুমূত্র রোগ কি? কোন হরমোনের অভাবে বহুমূত্র রোগ হয়?
সাধারণ জিজ্ঞাসা
বাইবেল অনুযায়ী হস্তমৈথুন করা যাবে কি?
শাস্ত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, "তুমি হস্তমৈথুন করো না", তবে এটি যৌনতার নৈতিকতা এবং কী স্বাস্থ্যকর, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যৌন অনৈতিক কাজ স্বার্থপর মনোভাব, পাপপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা এবং মানসিক অস্থিরতা থেকে জন্ম নেয়। এসব আচরণ সাধারণত গোপনে করা হয় এবং এর সঙ্গে লজ্জা ও অপরাধবোধ জড়িয়ে থাকে।
ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত করলে কি গুনাহ হয়?
আপনি যদি একজন খ্রিস্টান হন, তাহলে হয়তো আপনার মনে হতে পারে যে রাতের বেলা স্বপ্নে বীর্যপাত পাপের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। বাইবেলে কোথাও স্বপ্নকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোনো কাজ বা পাপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। তাই আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে এই প্রাকৃতিক ও অনিয়ন্ত্রিত শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলো লজ্জার কিছু নয়, বরং এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ারই একটি অংশ।
অনুভূতি ছাড়াই বীর্যপাত হয় কেন?
যদিও অরগাজম ছাড়াই বীর্যপাত (অরগাজমিক ইজাকুলেশন) নিজে থেকে তেমন কোনো শারীরিক ক্ষতি করে না, তবে এটি শরীরের ভেতরে থাকা কিছু উদ্বেগজনক কারণের ইঙ্গিত হতে পারে। যেমন, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা মানসিক চাপ এর কারণ হতে পারে। আবার এটি মেরুদণ্ডের আঘাতের মতো কোনো শারীরিক সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
বীর্যপাত কি পুরুষের ইউটিআইতে সাহায্য করে?
হ্যাঁ, ইউটিআই (মূত্রনালির সংক্রমণ) থাকলেও আপনি যৌন মিলন করতে পারেন। তবে এতে অস্বস্তি বা ব্যথা হতে পারে। এমনকি সহবাস, হস্তমৈথুন বা বীর্যপাত ইউটিআই-এর উপসর্গ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এবং সেরে উঠতে সময়ও বেশি লাগতে পারে। তাই অনেক চিকিৎসক পরামর্শ দেন, সম্পূর্ণভাবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা ভালো।