Yes Men

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, ঝুলে যায় কেন ও প্রতিকার জানুন

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, ঝুলে যায় কেন ও প্রতিকার জানুন

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারণ কি? এই প্রশ্নটি অনেক পুরুষের মনেই কখনো না কখনো জাগে। অন্ডকোষের ব্যথা কখনো কখনো অস্বস্তিকর এবং চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই ভাবেন, অন্ডকোষে ব্যথা হলেই তা গুরুতর কোনো সমস্যার লক্ষণ। কিন্তু সবসময় তা হয় না। তবে একে উপেক্ষা করাও উচিত নয়। আজকের এই ব্লগটিতে  আমরা জানবো, বাম অন্ডকোষে ব্যথার বিভিন্ন কারণ, কেন অন্ডকোষ ঝুলে যায় এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে।

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?

বাম অন্ডকোষে ব্যথা হওয়া একটি বেশ উদ্বেগজনক বিষয় হতে পারে এবং এটি কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। যখন আপনি অন্ডকোষের উপরে ছোট একটি মার্বেলের মতো কিছু অনুভব করেন এবং ওই স্থানে ব্যথা পান, এটি শরীরের ভেতরে কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এটি নানা ধরনের কারণেই ঘটতে পারে, এবং প্রতিটি কারণের জন্য আলাদা চিকিৎসা দরকার হতে পারে। যেমন: একটি সাধারণ কারণ হতে পারে হাইড্রোসেল, যেখানে অন্ডকোষের আশপাশে তরল জমা হয়। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে যদি এটি বড় হয় বা চাপ সৃষ্টি করে, তখন অস্বস্তি হতে পারে। এই ধরনের সমস্যায় সাধারণত অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে যদি এটি নিজের থেকে কমে না যায়।

আরেকটি সম্ভাব্য কারণ হল ভ্যারিকোসেল, যেখানে অন্ডকোষের রক্তনালীগুলো বিকৃত বা ফুলে যায়। এটি বেশ ব্যথা দিতে পারে এবং ওই অংশে ভারী বা টান টান লাগতে পারে। ভ্যারিকোসেলের কারণে প্রায়শই দীর্ঘমেয়াদী অস্বস্তি বা টান টান অনুভূতি হতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বা শারীরিক পরিশ্রম করলে।

স্ক্রোটাল কিস্টও হতে পারে অন্ডকোষের পাশে ছোট একটি মার্বেলের মতো গঠন তৈরি হওয়ার কারণ। এটি এক ধরনের তরল ভরা ছোট থলি যা সাধারণত ক্ষতিকর নয়, কিন্তু ব্যথা বা অস্বস্তি দিতে পারে যদি এটি বড় হয়ে যায় বা কোনো নার্ভের ওপর চাপ দেয়। কখনো কখনো, এই কিস্টগুলো নিজে থেকেই চলে যেতে পারে, কিন্তু অনেক সময় চিকিৎসা বা অপারেশন করতে হতে পারে যদি এটি সমস্যা সৃষ্টি করে।

অন্ডকোষের ব্যথার অন্যতম সাধারণ আরেকটি কারণ হতে পারে কোনো ধরনের সংক্রমণ বা প্রদাহ। যখন অন্ডকোষে কোনো ইনফেকশন ঘটে, তখন অন্ডকোষ ফুলে যেতে পারে এবং তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে হতে পারে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক বা অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সংক্রমণ বা প্রদাহের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হঠাৎ করে ব্যথা বেড়ে যাওয়া, অন্ডকোষের ফোলা বা লাল হওয়া, এবং কখনও কখনও জ্বর হওয়া।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা বা মানসিক চাপের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় অন্ডকোষের ব্যথারও কারণ হতে পারে। মানসিক চাপের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বা শরীরের পানির অভাব হলে এটি অন্ডকোষে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ।

এমন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত, বিশেষ করে ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তারা আপনার শারীরিক পরীক্ষা করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে আলট্রাসনোগ্রামের মতো কিছু পরীক্ষা করতে পারেন, যা দিয়ে সমস্যার আসল কারণ জানা যাবে। কখনও কখনও, চিকিৎসক কিছু ওষুধ দিয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারেন, আবার কখনও অপারেশন বা অন্য কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

ব্যথা কমানোর জন্য চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা, ফিজিওথেরাপিস্টদের থেকে ফিজিওথেরাপি এবং প্রয়োজনীয় বিশেষ যত্ন নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। আপনার শারীরিক অবস্থা বা কোনো সমস্যাকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। সমস্যাটি তত বেশি বাড়বে যত দেরি করবেন, তাই দ্রুত চিকিৎসা নিলে আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারবেন।

বাম অন্ডকোষ ঝুলে যায় কেন?

বাম অন্ডকোষ ঝুলে যায় কেন?

বাম অন্ডকোষ ঝুলে যাওয়ার পেছনে সাধারণত বেশ কিছু স্বাভাবিক কারণ থাকে। প্রথমত, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে অন্ডকোষের চারপাশের টিস্যু এবং মাংসপেশি কিছুটা শিথিল হয়ে যায়, যা অন্ডকোষকে আরও ঝুলে যেতে সাহায্য করে। এছাড়া, তাপমাত্রার পরিবর্তনও অন্ডকোষের ঝুলে যাওয়ার অন্যতম কারণ। ঠান্ডা অবস্থায় অন্ডকোষ শরীরের কাছাকাছি থাকে, আর গরম আবহাওয়ায় এটি নিচের দিকে ঝুলে থাকে, কারণ এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কখনো কখনো অতিরিক্ত ওজন, ভারী শারীরিক পরিশ্রম বা দাঁড়িয়ে থাকার কারণে পেশির দুর্বলতাও অন্ডকোষ ঝুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যদিও এটি সাধারণত স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তনের অংশ, তবে যদি ঝুলে যাওয়ার সাথে ব্যথা, অস্বস্তি বা অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বাম অন্ডকোষে ব্যথা হলে করণীয় ও প্রতিকার

বাম অন্ডকোষে ব্যথা হলে করণীয় ও প্রতিকার

বাম অন্ডকোষে ব্যথা হলে অনেকেই ভয় বা অস্বস্তি অনুভব করেন, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কিছু সাধারণ পদক্ষেপ মেনে চললে ব্যথা উপশম করা সম্ভব। প্রথমত, বিশ্রাম নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের অতিরিক্ত চাপ ব্যথাকে বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই শুয়ে বা বসে আরাম করুন এবং শারীরিক কাজকর্ম কমিয়ে ফেলুন। এরপর অণ্ডকোষে বরফের প্যাক প্রয়োগ করতে পারেন, যা ফোলাভাব ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে সরাসরি বরফ না দিয়ে, একটি পাতলা কাপড়ে পেঁচিয়ে বরফ ব্যবহার করা উচিত, যাতে ত্বকে কোনও ক্ষতি না হয়। এই প্রক্রিয়াটি দিনে কয়েকবার, প্রতিবার ১৫-২০ মিনিটের জন্য করা যেতে পারে।

ব্যথা খুব বেশি হলে, সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ যেমন: প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন নেওয়া যেতে পারে, যা দ্রুত ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে। তবে ওষুধ গ্রহণ করার আগে বা দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা থাকলে, একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। প্রায়শই ছোটখাটো আঘাত বা সামান্য সংক্রমণের কারণে অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যথা গুরুতর সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।

অণ্ডকোষের ব্যথার কারণগুলির মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কিছু হলো সংক্রমণ এবং প্রদাহ। উদাহরণস্বরূপ, এপিডিডাইমাইটিস হল শুক্রাণু নালীতে সংক্রমণ বা প্রদাহ, যা অণ্ডকোষে ব্যথা ও ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, অণ্ডকোষে সংক্রমণ (অরকাইটিস) হতে পারে, যা ব্যথা ও জ্বরের মতো লক্ষণ তৈরি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে টেস্টিকুলার টর্শন হতে পারে, যা একটি জরুরি অবস্থা। এই অবস্থায় অণ্ডকোষের শিরাগুলি মোচড়ানোর কারণে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।

অন্যান্য সাধারণ কারণগুলির মধ্যে আছে ভ্যারিকোসিল, যা অণ্ডকোষের শিরাগুলির ফোলাভাব এবং ব্যথা সৃষ্টি করে। এছাড়াও, হাইড্রোসিল বা স্পার্মাটোসিলের মতো অবস্থাও ব্যথার কারণ হতে পারে, যেখানে অণ্ডকোষে তরল জমে ফুলে ওঠে। অনেক সময় আঘাতের পর বা ভ্যাসেকটমি পরবর্তী সংক্রমণ থেকেও ব্যথা হতে পারে।

তবে, ব্যথা যদি তীব্র হয় বা অনেক দিন ধরে থাকে, অবহেলা না করে দ্রুত ইউরোলজি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী অণ্ডকোষের ব্যথা থেকে ভবিষ্যতে বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, এমনকি প্রজনন ক্ষমতার ক্ষতিও হতে পারে।

সবচেয়ে ভালো হল, অণ্ডকোষের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা। যে কোনও ধরনের অস্বাভাবিক ব্যথা, ফোলাভাব বা পরিবর্তন হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, সঠিক অন্তর্বাস পরা এবং অন্ডকোষে চাপ পড়া এড়ানো কিছু সাধারণ অভ্যাস, যা অণ্ডকোষের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।

বিস্তারিত জানুন: টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায় কেন? বৃদ্ধির ব্যায়াম গুলো কি?

বিস্তারিত জানুন: ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

বিস্তারিত জানুন: অন্ডকোষে পানি জমার কারণ | ঝুলে যাওয়া অন্ডকোষ টাইট করার উপায়

 

তথ্য সূত্র

Mount Sinai — Testicle pain

Cleveland Clinic — Testicular Pain

Healthline — 7 Reasons Your Left Testicle Hurts

সাধারণ জিজ্ঞাসা

এটা নির্ভর করে আপনার টেস্টিকুলার ব্যথার কারণের ওপর। যদি টেস্টিকুলার টর্শন বা টেস্টিকুলার ক্যান্সারের মতো জরুরি পরিস্থিতি হয়, তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। টেস্টিকুলার ব্যথার চিকিৎসায় অস্ত্রোপচারের ধরণের মধ্যে টেস্টিকুলার ডি-টরশন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

যৌনবাহিত সংক্রমণ (এসটিআই): চিকিৎসা না করা ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া প্রায়ই অণ্ডকোষের ব্যথার সাথে সম্পর্কিত। তবে, অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ যেমন: সিফিলিস এবং হারপিস টাইপ ২-ও যৌনাঙ্গে ঘা এবং এক বা উভয় অণ্ডকোষে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) তখন ঘটে যখন মূত্রথলি, কিডনি, মূত্রনালী বা মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। ইউটিআই প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়ার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে, এবং এই ব্যথা অণ্ডকোষ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া, একজন ব্যক্তি বারবার প্রস্রাব করার তাগিদও অনুভব করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top