Yes Men

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

অণ্ডকোষে ব্যথা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা যেকোনো পুরুষের জীবনে এক বা একাধিকবার অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে ডান অণ্ডকোষে ব্যথা হলে তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এই ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হতে পারে বা সময়ের সাথে ধীরে ধীরে বাড়তে পারে এবং এর পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিন্তু ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?

এই ব্লগে, আমরা ডান অণ্ডকোষে ব্যথার সম্ভাব্য কারণ, করণীয়, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যাতে আপনি এই সমস্যাটি সঠিকভাবে বুঝতে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে পারেন।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

ডান অন্ডকোষ ঝুলে যায় কেন?

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, কেন ডান অন্ডকোষ বাম অন্ডকোষ থেকে একটু বেশি ঝুলে থাকে। আসলে এটি একটি সাধারণ ব্যাপার এবং শারীরিক স্বাভাবিকতায় অন্তর্ভুক্ত। অন্ডকোষের এই অবস্থান শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও ঘটে। অনেক সময় বাম অন্ডকোষ ডান অন্ডকোষ থেকে কিছুটা উপরে থাকে, তবে এটা স্বাভাবিক।

যদি ডান অন্ডকোষ ঝুলে থাকে কিন্তু কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি না থাকে, তাহলে সাধারণত চিন্তার কিছু নেই। তবে যদি অন্ডকোষে ব্যথা হয়, চলাফেরায় সমস্যা হয়, ঝাঁকুনি বা ভারি অনুভূত হয়, অথবা অন্ডকোষে ফোলাভাব বা গিঁটের মতো কিছু দেখা যায়, তখন এটি চিন্তার কারণ হতে পারে। যেমন: টিউমার বা অন্ডকোষের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত।

ডান পাশের অন্ডকোষে ব্যাথা

ডান পাশের অণ্ডকোষে ব্যথা একটি অস্বস্তিকর ও চিন্তার কারণ হতে পারে, এবং এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। অণ্ডকোষ যদি ঠিকমতো স্পার্ম তৈরি করতে না পারে বা খুব কম তৈরি করে, তাহলে সেখানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ওডিশা এবং ত্রিপুরার মতো অঞ্চলে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এটি শুধু শারীরিক অস্বস্তি নয়, মানসিক উদ্বেগেরও কারণ হতে পারে, কারণ স্পার্ম উৎপাদনের সমস্যায় সন্তান ধারণের ক্ষমতা নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়েন।

আরেকটি সাধারণ কারণ হলো সংক্রমণ। কিছু ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া অণ্ডকোষে সংক্রমণ ঘটায়, যা ডান পাশে ব্যথা এবং ফোলাভাবের কারণ হতে পারে। সংক্রমণ খুব অস্বস্তিকর এবং কখনো কখনো ব্যথা এত বেশি হয় যে চলাফেরা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। সংক্রমণের সাথে জ্বর বা অস্বস্তিবোধও থাকতে পারে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মান নষ্ট করে দেয়।

মূত্রনালীর সংক্রমণ বা এমনকি অণ্ডকোষের ক্যান্সারও ডান পাশে অণ্ডকোষের ব্যথার কারণ হতে পারে। ক্যান্সার শব্দটি শুনলেই অনেকের মনে ভয় কাজ করে, কিন্তু প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করলে চিকিৎসা সম্ভব। তাই, এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করা যায়, তত দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

ডান পাশের অন্ডকোষ বড়

ডান পাশের অণ্ডকোষ বড় হয়ে গেলে এটি চিন্তার কারণ হতে পারে এবং এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। কখনো কখনো এটি সাধারণ হতে পারে, তবে বেশিরভাগ সময়েই এর পেছনে স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা লুকিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, সংক্রমণ (ইনফেকশন) অন্যতম কারণ হতে পারে, যেখানে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া অণ্ডকোষে সংক্রমণ ঘটায়, যার ফলে অণ্ডকোষ ফোলাভাব হয়ে বড় দেখায়। আবার হার্নিয়া হলে পেটের একটি অংশ অণ্ডকোষের ভেতরে চলে এসে তা বড় করে তুলতে পারে। অণ্ডকোষের মোচড় (টর্সন) বা শুক্রনালির মোচড়ও এই সমস্যার কারণ হতে পারে, যা খুব তীব্র ব্যথার পাশাপাশি অণ্ডকোষের আকার বড় করে তোলে।

এর বাইরে মূত্রনালীর সংক্রমণ কিংবা অণ্ডকোষের ক্যান্সার থেকেও অণ্ডকোষ বড় হতে পারে। এটা শুনতে ভয় লাগলেও, অনেক সময় প্রাথমিক লক্ষণ দেখে চিকিৎসা শুরু করলে ভালো হওয়া সম্ভব। তাই, যদি ডান পাশের অণ্ডকোষ হঠাৎ বড় দেখায় বা ফোলাভাব হয়, তা অবহেলা না করে দ্রুত একজন ডাক্তারকে দেখানো উচিত। দ্রুত চিকিৎসা নিলে মানসিক শান্তিও আসে, আর সমস্যা সমাধানও সহজ হয়।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি? ও প্রতিকার

অণ্ডকোষের ব্যথা সাধারণত যে কোনো পাশেই হতে পারে, তবে অনেক সময় বিশেষ করে ডান অণ্ডকোষে ব্যথা নিয়ে অনেকেই বেশি চিন্তিত হন। ডান অণ্ডকোষে ব্যথার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে এবং এটি হঠাৎ করে শুরু হলে তা বেশ উদ্বেগজনক হতে পারে। ডান অণ্ডকোষে ব্যথার বেশ কয়েকটি সাধারণ কারণের মধ্যে অন্যতম হলো টেস্টিকুলার টর্শন। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে ডান অণ্ডকোষ ঘুরে শুক্রনালি পেঁচিয়ে যায় এবং রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ডান অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা শুরু হয় এবং এই অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা না নিলে অণ্ডকোষে স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। টেস্টিকুলার টর্শন যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে, তবে কিশোরদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।

ডান অণ্ডকোষে ব্যথার আরেকটি কারণ হতে পারে এপিডিডাইমাইটিস। এটি এপিডিডাইমিস নামক অংশের প্রদাহ, যা সাধারণত সংক্রমণের কারণে ঘটে। এই অবস্থায় ডান অণ্ডকোষ ফোলা, লাল ও উষ্ণ হয়ে যেতে পারে, এবং ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কখনো কখনো এতে তলপেটে ব্যথাও অনুভব হয়, যা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা না করলে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। এপিডিডাইমাইটিস সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং অনেক সময় সংক্রমণের কারণে ডান অণ্ডকোষে ব্যথা অনুভূত হয়।

ডান অণ্ডকোষে আঘাত লাগলে তা সাময়িক ব্যথার কারণ হতে পারে। খেলাধুলা বা কোনো দুর্ঘটনার কারণে ডান অণ্ডকোষে আঘাত লাগলে তা অল্প সময়ের জন্য ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে, তবে এই ব্যথা সাধারণত নিজের থেকেই চলে যায়। যদি ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে বা খুব তীব্র হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি?, করণীয়, কেন হয় ও প্রতিকার কি?

অনেক সময়, ডান অণ্ডকোষে ব্যথার পেছনে হার্নিয়া একটি বড় কারণ হতে পারে। ইনগুইনাল হার্নিয়া হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে পেটের ভেতরের কোনো অংশ অণ্ডকোষের মধ্যে চলে আসে, যার ফলে ডান অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা ও ফোলাভাব হতে পারে। হার্নিয়া হলে তা দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন, কারণ এটি সময়মতো সমাধান না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

এছাড়াও, ডান অণ্ডকোষে মূত্রনালীর সংক্রমণ, প্রোস্টেটের প্রদাহ বা টেস্টিকুলার ক্যান্সারের মতো সমস্যার কারণেও ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে, যদি ডান অণ্ডকোষে ফোলাভাব বা কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। টেস্টিকুলার ক্যান্সার সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে কিছুক্ষেত্রে এটি অস্বস্তি ও ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাই কোনো ধরনের অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত।

অণ্ডকোষের ব্যথা, বিশেষত ডান অণ্ডকোষে ব্যথা, অবহেলা করা উচিত নয়। এটি শারীরিক এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে, তাই, অণ্ডকোষে ব্যথা হলে বা কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

বিস্তারিত জানুন: সহবাসের আগে লবঙ্গ খেলে কি হয়?, উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম কি?

বিস্তারিত জানুন: টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত? এবং কি খাওয়া উচিত না?

বিস্তারিত জানুন: পেনিস উত্থান জনিত সমস্যা | কি খেলে বীর্য উৎপাদন হয়?

তথ্য সূত্র

Medicine Net — Testicular Pain and Disorders

Testicular Cancer Society — 4 Week Pain In Right Testicle

Medline Plus —  Testicle pain

NHS — Cancer of the testicle

Cleveland Clinic — Testicular Pain

সাধারণ জিজ্ঞাসা

অণ্ডকোষের কিছু সমস্যায়, যেমন হার্নিয়া হলে, অনেক সময় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে একজন সার্জিকাল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সার্জারি করার পর কীভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে হবে বা পরবর্তী ধাপগুলো কী হবে, সে সম্পর্কে ইউরোলজিস্ট সব বিস্তারিত জানিয়ে দেবেন।

যদি কেউ গাইনোকোমেশিয়ার (ছেলেদের স্তনবৃদ্ধি) মতো সমস্যায় ভুগে থাকে, তখন এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা করেন। তবে যদি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সার্জিকাল বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হয়।

অস্ত্রোপচারের পরে সুস্থ হতে ফিজিওথেরাপির প্রয়োজন এবং একজন দক্ষ ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তা করবেন।

অণ্ডকোষে আঘাত লাগলে, যা ত্বকের একটি থলির মধ্যে আবৃত থাকে, সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা পেট বা পায়ের নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়াও অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে থাকতে পারে। যেমনঃ প্রস্রাবে রক্ত আসা।

যৌনবাহিত সংক্রমণ (এসটিআই) অপরিচিকিৎসিত ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া প্রায়ই অণ্ডকোষের ব্যথার সাথে সম্পর্কিত থাকে। তবে অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ যেমন সিফিলিস ও হারপিস টাইপ ২-ও যৌনাঙ্গে ঘা এবং অণ্ডকোষে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে, যা এক বা দুই অণ্ডকোষেই হতে পারে।

অণ্ডকোষ বড় করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাবার নেই। তবে, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করে অণ্ডকোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন: ডিম, বাদাম, এবং মাছ, টেসটোসটেরন উৎপাদনে সহায়ক হতে পারে, যা যৌন স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

ব্যাকটেরিয়া জনিত এপিডিডাইমাইটিস এবং এপিডিডাইমো-অরকাইটিস, যেখানে সংক্রমণ এপিডিডাইমিস থেকে একটি অণ্ডকোষে ছড়িয়ে পড়ে, এর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন। যদি সংক্রমণের কারণ হয় কোনো যৌনবাহিত সংক্রমণ (STI), তবে যৌন সঙ্গীদেরও চিকিৎসা করানো জরুরি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top