ইরেকটাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction)
ইরেকটাইল ডিসফাংশন কি ? (what is erectile dysfunction)
ইডি অর্থাৎ ইরেকটাইল ডিসফাংশন যা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা নামে পরিচিত। ইরেকটাইল ডিসফাংশন এখানে দুটি শব্দ একটি হচ্ছে ডিসফাংশন অর্থাৎ কোন কিছু ঠিকমত কাজ করছে না আরেকটি শব্দ হচ্ছে ইরেক্টাইল যা পুরুষের সেক্সুয়াল ইরেকশন বুঝায় যা ঠিকমত কাজ করছে না। এটা যৌন সমস্যার একটি অংশ।
কখন আসলে আমরা বুঝব যে, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হচ্ছে বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যায় ভুগছি বা কোন পর্যায় হলে আমরা আসলে বুঝব যে এটা একটা ডিজিজ এবং আমাদের ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। এসব সেক্সচুয়াল ডিসঅর্ডার গুলোকে আসলে একটা জিনিস দিয়ে ডিফাইন করা যায় না। যেমন হরমোনাল ইস্যু, ওজনের ব্যাপার , থাইরয়েড ইস্যু, এনাটোমিকাল কিছু ইস্যু, মূত্রনালী বা মূত্রথলির কিছু সমস্যা, এছাড়াও মানসিক টেনশন, মানসিক স্ট্রেস বা কিছু ওষুধের সাইড ইফেক্ট সহ আরো বিভিন্ন সমস্যা এই সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার এর সাথে জড়িত।
কারো যদি সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স এর সময় লিঙ্গ শক্ত না হয় বা শক্ত হলেও তা সাথে সাথে নিস্তেজ হয়ে যায় তার মানে হচ্ছে পর্যাপ্ত শক্ত হচ্ছে না। এই সমস্যা যদি মাসে একবার হয় তাহলে সেটা নরমাল কিন্তু এটা যদি বারবার হতে থাকে তাহলে সেটাকে আমরা বলব এটা একটা রোগ তখন সেটাকে আমরা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বলি।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন কেন হয়
ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction) হল যখন একজন পুরুষ নিয়মিত বা স্থায়ীভাবে লিঙ্গমুখ উত্থাপন বা বজায় রাখতে অক্ষম হন যা যৌনতা সম্পন্ন করার জন্য যথেষ্ট। এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা যেকোনো বয়সের পুরুষদের প্রভাবিত করতে পারে, তবে এটি ৩০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ইডি এর অনেকগুলি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- শারীরিক কারণ: এগুলি হল ইডি এর সবচেয়ে সাধারণ কারণ। এর মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ধূমপান, অতিরিক্ত মদ্যপান, নির্দিষ্ট ওষুধ এবং শারীরিক আঘাত।
- মানসিক কারণ: এর মধ্যে রয়েছে চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা, সম্পর্কের সমস্যা এবং যৌন আত্মবিশ্বাসের অভাব।
- জীবনধারাগত কারণ: এর মধ্যে রয়েছে শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা, অপর্যাপ্ত ঘুম এবং খারাপ খাদ্যাভ্যাস।
ইডি সম্পর্কে সমাজের প্রচলিত ভুল ধারণা
আমাদের সমাজে এই ইডি বা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যা নিয়ে অনেক ভুল ধারণা কাজ করে। কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় লিঙ্গ একদিকে বাঁকা, কারো কারো লিঙ্গ সামনের দিক চিকন থাকে আবার কারো লিঙ্গ কিছুটা ছোট হয়ে থাকে। এইসব সমস্যা নিয়ে আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা থাকে।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর লক্ষণ
পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ইডি)। এটি লিঙ্গের দৃঢ়তা বা ঋজুতা অর্জন বা বজায় রাখার অক্ষমতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা যৌনতায় সন্তুষ্টিকরভাবে অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয়।
ইডি (ED) এর কিছু লক্ষণ
- যৌনতায় লিঙ্গে পূর্ণ বা পর্যাপ্ত দৃঢ়তা না আসা।
- লিঙ্গে দৃঢ়তা দ্রুত হারিয়ে ফেলা।
- যৌন উদ্দীপনার অভাব ।
- কম যৌন আকাঙ্ক্ষা ।
- যৌনতায় অসুবিধা ।
এই লক্ষণগুলি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং একজন ব্যক্তির যৌন জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে, তাহলে ইডি ধরা যেতে পারে।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন এর সমাধান ও চিকিৎসা
পুরুষের লিঙ্গে যথেষ্ট রক্ত প্রবাহ না ঘটলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ইডি) দেখা দেয়, যার ফলে সঙ্গমের জন্য যথেষ্ট শক্ততা অর্জনে বা বজায় রাখতে অসুবিধা হয়।
ইডি এর সমাধান
জীবনধারা পরিবর্তন: নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান ও অ্যালকোহল পান ত্যাগ করুন।
থেরাপি: মনো-সামাজিক থেরাপি, কগনিটিভ-বিহেভিয়রাল থেরাপি,শকওয়েব থেরাপি,আকুপাংচার থেরাপি। (এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।)
ওষুধ: সিলডেনাফিল (ভায়াগ্রা), তাদালাফিল (সিয়ালিস), ভার্ডেনাফিল (লিভিট্রা) । (এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি হয়ে থাকে।)
অন্যান্য: লিঙ্গ পাম্প, ইনজেকশন, সার্জারি । (এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশি হয়ে থাকে।)
ইডি সমস্যায় কি কি চিকিৎসা আছে?
ইডি বা লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার চিকিৎসার কথা যদি বলতে যাই, সে ক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের উপরে খেয়াল করতে হবে। খাদ্য তালিকায় সুষম খাবার রাখতে হবে। নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে। ডায়াবেটিস, প্রেসার, হৃদরোগ এই ধরনের দীর্ঘস্থায়ী কোন সমস্যা থাকলে সেটি কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করতে হবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে।
এগুলোর পাশাপাশি আমাদের এখানে কিছু চিকিৎসা আছে যার মাধ্যমে এই ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে। যেমন – শকওয়েভ থেরাপি, আকুপাংচার থেরাপি, আরটিএমএস থেরাপি, পেলভিক স্টিমুলেশন ইত্যাদি। এই থেরাপি গুলোর সম্মিলিতভাবে নেয়ার মাধ্যমে লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার কার্যকরী সমাধান হয়ে থাকে। এ ছাড়াও পুরুষদের পেরোনিস ডিজিজ হয়ে থাকে। এর চিকিৎসা অনেকটা ইডির মত।
সবচেয়ে আধুনিক নিরাপদ এবং স্থায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি কোনটি?
পুরুষের লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার সবচেয়ে আধুনিক নিরাপদ এবং স্থায়ী চিকিৎসা হচ্ছে –
- শকওয়েব থেরাপি : এই থেরাপি ৬ টা থেকে সর্বোচ্চ ১২ টা পর্যন্ত সেশন নিতে হয়। প্রতি সপ্তাহে সাধারণত ১ টি করে সেশন দেয়া হয়। ৩ টা থেকে ৪ টা সেশন নেয়ার পরে রোগী তার ইমপ্রুভমেন্ট বুঝতে পারবে। এই শকওয়েব থেরাপি লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যায় অনেক কার্যকরী চিকিৎসা।
- আকুপাংচার থেরাপি : এই থেরাপির মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে লিঙ্গ শক্ত হতে সাহায্য করে।
- পেলভিক স্টিমুলেটর : এই মেশিনের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোর মাসেলের শক্তি বাড়ায়। ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার যে সমস্যা এগুলোর সমাধান হয়ে থাকে।
- আরটিএমএস : অনেক সময় আমরা বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকি। যার ফলে আমাদের রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। এই আর টি এম এস থেরাপির মাধ্যমে ঘুমের সমস্যার সমাধান হয়। রাতে ভালো ঘুম হলে শরীরে সেক্সুয়াল হরমোনের মাত্রা ঠিক থাকে।
এই থেরাপি গুলো লিঙ্গ উত্থান জনিত সমস্যার সমাধানে সবচেয়ে আধুনিক নিরাপদ এবং স্থায়ী সমাধান। এটা ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে শতভাগ প্রমানিত।
আমাদের কাছ থেকে কেন সেবা নিবেন?
আমাদের কাছ থেকে কেন সেবা নিবেন?, এটি আপানাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইয়েস মেন (Yes Men) অল্প খরচে পুরুষের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য, আমাদের ফিজিওথেরাপিস্টরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চিকিৎসা করে আসছেন। “ইয়েস মেন”এ উন্নত মানের শকওয়েব থেরাপি, আরটিএমএস, পেলভিক স্টিমুলেটর এবং আকুপাংচার থেরাপি দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা করানো হয়ে থাকে।
কিছু জিজ্ঞাসা
ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) হল যখন একজন পুরুষ যৌন ক্রিয়াকলাপের জন্য যথেষ্ট শক্ত বা দীর্ঘস্থায়ী মেলে ডিংগা অর্জন বা বজায় রাখতে অক্ষম হয়। এটি একটি সাধারণ সমস্যা যা সব বয়সের পুরুষদের প্রভাবিত করতে পারে।
হ্যাঁ, ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে ভুগছেন এমন একজন পুরুষ একজন মহিলাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন। অনেকগুলি উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে একজন পুরুষ এবং মহিলা যৌন ক্রিয়াকলাপে সন্তুষ্টি খুঁজে পেতে পারেন, এবং একটি শক্ত মেলে ডিংগা থাকা সর্বদা প্রয়োজন হয় না।
একজন পুরুষের ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ইডি) হওয়ার প্রভাব তার সঙ্গীর উপর বিভিন্নভাবে পড়তে পারে। কিছু মহিলা হতাশা, রাগ, বিব্রত, অপরাধী বা একা বোধ করতে পারে। অন্যরা তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বা অনিশ্চিত বোধ করতে পারে।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ইডি) যেকোনো বয়সে শুরু হতে পারে, তবে এটি ৩০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন বয়সের পুরুষদের প্রভাবিত করে। জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মতে, ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে প্রায় ১০%ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) তে ভোগে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) এর হার বৃদ্ধি পায়। ৬০ বছর বয়সী বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে প্রায় ৭০% ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ED) তে ভোগে।
তিনটা থেকে চারটা সেশন থেরাপি নেওয়ার পর রোগী তার ইম্প্রুভমেন্ট বুঝতে পারবে।
এই চিকিৎসা শতভাগ কার্যকরী এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হয়।
ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসে এটা প্রমাণিত যে, এই চিকিৎসার কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ।