Yes Men

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা : সাধারণত প্রস্রাব ধরে ধরে রাখতে না পারা বলতে বুঝায়, যখন প্রস্রাবের চাপ হয় তখন অতি দ্রুত প্রস্রাব করতে যাওয়া অথবা প্রস্রাব হয়ে গিয়ে কাপড় ভিজে যাওয়া।

সমস্যাটি কাদের হয়ে থাকে : সাধারণত পুরুষ ও মহিলা উভয়ই এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলারা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। মধ্য বয়স্ক অথবা ৪০-৫০ বছরের পর থেকে সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করে। প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা এবং প্রস্রাব সম্পূর্ণ না হওয়া এটি বাংলাদেশে পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই একটি কমন সমস্যা।

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার কারণ 

১. পেলভিক ফ্লোর মাসেলের দুর্বলতা: পেলভিক ফ্লোর মাসেল সাধারণত আমাদের প্রসাবের চাপ বা প্রস্রাব করা বা প্রস্রাব ধরলে ধরে রাখতে সাহায্য করে। যদি কোন কারণে এই মাসেল দুর্বল অথবা অকেজো অথবা প্যারালাইসিস হয়ে থাকে, তবে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তখন সমস্যাটি হয়ে থাকে।

২.প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যাওয়া অথবা পোস্টেট ক্যান্সার।

৩.জরায়ু কেটে ফেলা।

৪.অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।

৫.বয়স অনেক বেড়ে যাওয়া।

৬.গর্ভধারণ, সন্তান প্রসব ও মাসিক।

৭.দীর্ঘ সময় প্রসাব আটকে রাখার অভ্যাস।

৮.অতিরিক্ত ওজন।

৯.কিছু রোগ। যেমন পারকিনসন, ব্রেন স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার।

১০. নার্ভ চাপে থাকা।

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার লক্ষণ

১.প্রস্রাব ধরলে দ্রুত প্রস্রাবব করতে যাওয়া।

২.ঘন ঘন প্রসাব করতে যাওয়া।

৩.প্রস্রাব নিজে নিজে ঝরে পড়া।

৪.প্রস্রাব শুরু করতে কষ্ট হওয়া।

৫.প্রসাব শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগা।

৬.ব্যথা অনুভূত হওয়া

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার রোগ নির্ণয় 

সাধারণত সমস্যার ইতিহাস এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।

  • সমস্যার ইতিহাস নেওয়া মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।
  • শারীরিক পরীক্ষা।
  • ব্লাডার স্ক্যান
  • মূত্র পরীক্ষা।

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা

প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারায় করণীয় ও চিকিৎসা

এই রোগের এর চিকিৎসা সাধারণত রোগের কারণ এর উপর নির্ভর করে। এ সমস্যায় যেসব চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে তা নিচে দেওয়া হল :

১.মেডিসিন: রোগের কারণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন এবং এন্টিবায়োটিক ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন।

২.সার্জারি : অনেক সময় কারণ অনুযায়ী সার্জারি প্রয়োজন হয়ে থাকে।

৩.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা : ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সাধারণত যদি পেলভিক ফ্লোর মাসেল দুর্বল হয়ে থাকে, নার্ভ চাপে থাকে, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে থাকে, ডায়াবেটিস, গর্ভবতী মহিলা, শরীরের অতিরিক্ত ওজন, উল্লেখিত রোগ গুলোর কারণে দেওয়া যেতে পারে।

  • পেলভিক ফ্লোর মার্সেলের দুর্বলতার জন্য কেগেল এক্সারসাইজ অথবা ফেলভিল স্টিমুলেশন চেয়ার  বা পোস্ট পারটাম মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • নার্ভ চাপে থাকলে নার্ভের চিকিৎসা দিতে হবে।
  • প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হওয়ার কারণে মূত্র ঝরে পড়লে  বা প্রসাব ধরে রাখতে না পারলে পেলভিক স্টিমুলেশন চেয়ার অথবা ওজন থেরাপি দেওয়া যেতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ডায়াবেটিস মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • গর্ভবতী মহিলাদের গাইনিক্লোজিকেল ফিজিওথেরাপি দেওয়া যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • পারকিনসন, ব্রেন স্ট্রোক ব্রেন টিউমারের জন্য মাসেল দুর্বল হলে থাকলে মাসেলের শক্তি বাড়াতে হবে।

৪.ঘরোয়া চিকিৎসা :

  • কিগেল এক্সারসাইজ করা।
  • প্রস্রাবের বেগ হলে প্রস্রাব দীর্ঘক্ষন আটকে না রাখা।
  • সাধারণত যারা ডেক্স ওয়ার্ক করেন তারা দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন এর থেকে বিরত থাকা। এতে আপনার ফেলভওক ফ্লোর মাসেল এর কার্যক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা।
  • নিয়ন্ত্রিত ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করা।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর : সাধারণত এটা মধ্য বয়সের পর থেকে হয়ে থাকে। তবে যদি কোন রোগের কারনে হয় সেটা যে কোন বয়সেই হয়ে থাকে।

উত্তর : পুরুষের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে।

উত্তর : এটা সাধারণত দৈনিক একবার করে সমস্যাটি দূর হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করতে হয়।

Scroll to Top